Posts

Showing posts from April, 2020

কিট ও কীটপতঙ্গ

Image
কিট ও কীটপতঙ্গ ঝড়ে বিধস্ত জঙ্গল। গাছ উপড়ে পড়ে আছে। এক লোক চিৎকার করে কাৎরাচ্ছে গাছে নীচে চাপা পড়ে। তাকে বাঁচানোর জন্য আশপাশ থেকে লোকজন ছুটে আসে। দা, কুড়াল, খুন্তী দিয়ে গাছে কোপ দিতে যাবে; এমন সময় কেউ একজন বলে উঠল, 'এ-ই গাছ কাটা যাবেনা। এটা বনবিভাগের গাছ। তাদের অনুমিত ছাড়া গাছ কাটা ঠিক হবেনা।' সমাজের লোকজন একযোগে বলে উঠল, 'তা ঠিকই বটে। আগে অনুমতি নিতে হবে।' দা, কুড়াল, খুন্তী ফেলে সবাই মিটিংয়ে বসে। মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়, লিখিত দরখাস্ত করতে হবে। এদিকে লোকটি গাছের নীচে মরণ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে আর বলছে, 'ভাই, আগে আমাকে বাঁচান।' সমাজের লোকজন তাকে ধমক দিয়ে বলল, 'ঐ মিয়া, আমরা কি বসে আছি? তোমাকে বাঁচানোর জন্যই তো কাজ করছি।' সমাজের লোকজন বন বিভাগের অফিসে দরখাস্ত জমা দিলো। বন বিভাগ তদন্ত কমিটি করলো। সে কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করতে আসলো। তখনও লোকটি মরণ যন্ত্রণায় ছটফট করছে আর চিৎকার করছে। বন বিভাগের লোকজন তার চিৎকার শুনে রেগে বলল, 'ঐ মিয়া চিল্লাইবা না, দেখছো না আমরা কাজ করছি। তোমাকে উদ্ধারের অফিসিয়াল প্রসেস চালাচ্ছি।' বন বিভাগ তদন্ত করে রিপোর্ট নিয়ে অফিসে গেলেন। ব...

একজন করোনাযোদ্ধা

Image
একজন করোনাযোদ্ধা   অফিস থেকে বের হওয়ার সময় খেয়াল করি। চার্জ ফুরিয়ে মোবাইলটা বন্ধ হয়ে আছে। পকেটে মোবাইলটা রাখতেই বিপদ আরেকটা টের পেলাম। ভুল করে বাসার চাবি ফেলে এসেছি! এই রাতে বাসায় এখন ঢুকবো কেমন করে? বাসায় ফোন করে গেট খুলতে বলবো, সেটাও বলতে পারবো না। বড়ই দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম। এখন শেষ ভরসা বাসার কেয়ারটেকার। তাকে ভালোই ভালো, পেলেই হলো। এই ভাবনা-চিন্তায় রওনা দিলাম।  আমার দশ বছরের ঢাকার জীবনে এমন সুনশান-নিস্তব্ধতার শহর দেখি নাই। নির্জন কোলাহলমুক্ত রাস্তার ল্যাম্পপোস্টের সোডিয়াম আলোয় হাঁটতে ভালোই লাগছে। গত একমাস এভাবেই হেঁটে বাসায় যায়। যদিও অফিস থেকে এম্বুল্যান্স সার্ভিস দিছে। আমার ব্যাকওয়ার্ড রাস্তার কারণে যায় না। একদিন অবশ্য এম্বুল্যান্সে গেছি, তবে বাসায় যেতে পারিনি। অফিস থেকে উঠে শহর ঘুরে আবার অফিসেই এসে নেমেছি। মিরপুর শ্যাওড়া পাড়া থেকে দু'তিন মিনিট সময় লাগে আমরা বাসায় হেঁটে আসতে। অফিস থেকে ব্যাকসাইড হওয়ায় ওদিকে যাতায়াত কম, সেখানে গিয়ে পইপই করে ঘুরেও আমার বাসার গলির মুখ আমি খুঁজে পায়নি। রাস্তায় মেট্রোরেলের কাজ হচ্ছে। উচু বেষ্টনীর মাঝে খেই হারিয়ে ফেলেছিলাম। ড্রাইভারকে বললা...

মধ্যবিত্তের কথা বলছি...

Image
মধ্যবিত্তের কথা বলছি   এই কিছুদিন আগের কথা। আমার বাচ্চার সুস্থতার জন্য ওর আম্মু মানত করেছিল। একটা মুরগি সাদগা দিবে। আমাকে বলল, 'তুমি একটা মুরগি কিনে কোন গরীব মানুষকে দিয়ে দাও।' এর আগেও বেশ কয়েকবার মানত করেছে। সেগুলো দ্রুতই পূরণ করেছি। যেগুলোর বেশিরভাগ ছিল মসজিদে টাকা দান। কিন্তু এবার সে মানত করেছে, জানের সাদগা হিসেবে একটা দেশী মুরগি দিবে।  এখন মুরগি কিনে কাকে দিবো? মনে মনে এমন জনকে খুঁজতে থাকি। পীরের দরবার কিংবা মাজার ব্যক্তিগত ভাবে পছন্দ করিনা। রাস্তার ফকির-মিসকিনকে দিবো ভাবলাম। কিন্তু কর্পোরেট ফকিরের ভিড়ে সত্যিকারের ফকির খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এই বিষয়ে নিয়ে অন্য একদিন আর্টিকেল লিখবো।    যাইহোক, বউয়ের মানত পূরণে দুদিন দেরি হওয়ায় ঘ্যানঘ্যান শুরু করে দিল। 'তোমাকে একটা মুরগি সাদগা দিতে বলেছি। তুমি দিচ্ছো না কেন?' বললাম, 'দেখ এটা আমাদের গ্রাম না। যদুর বাপ মধু মিয়া গরীব মানুষ। একটা মুরগি কিনে দিয়ে আসলাম। খেয়েদেয়ে দোয়া করলো। এটা হচ্ছে ঢাকার শহর! না জেনে যাকে তাকে দিলে পিছে দেখা যাবে, সে মুরগিটা বিক্রি করে শুকনো (গঞ্জিকা) খেয়ে ঝিম মেরে পড়ে থাকবে।' অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলাম,...

হোম কোয়ারেন্টাইন

Image
দৈত্য যখন হোম কোয়ারেন্টাইনে ঘুমের মধ্যেই শুনতে পারছি। হঠাৎ ঘুম ভেঙে লাফিয়ে উঠে বসলাম। টিভির দিকে তাকিয়ে দেখি অফ আছে। মোবাইল চেক করে দেখি এফএম রেডিও বন্ধ। তাহলে এই গানের আওয়াজ কোত্থেকে আসছে? বাহির থেকে আসছে কি-না জানালা দিয়ে উঁকি দিলাম। নাহ, বাহির থেকে আওয়াজ আসছেনা। আওয়াজ ঘরে মধ্যেই হচ্ছে। আমি এদিক ওদিক তাকিয়ে খুঁজতে লাগলাম। গানটি,  আলিফ লায়লা,  আলিফ লায়লা,  আলিফ লায়লা... দেখ সব নতুন কাহিনি... মন ভরে যায় তার বানী... কত যুগ পেরিয়ে গেছে... নতুন তবুও রয়ে গেছে... আলিফ লায়...লা...আ...আ...আ... আমি নিশ্চিত ঘরের মধ্যে আলাদীনের দৈত্যে অবস্থান করেছে। আমি তন্নতন্ন করে খুঁজতে লাগলাম। এককোণে কুপীর মতো কী যেন দেখা যাচ্ছে। আমি গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে গেলাম। ইউরেকা, আমি পেয়ে গেছি আলাদীনের আশ্চর্যের প্রদীপ! এই ঘরে আলাদীনের আশ্চর্যের প্রদীপ কোথা থেকে এলো? সেটা আমার জানার বিষয় না, আমি প্রদীপটা পেয়েছি। এটাই বিষ্ময়কর বিষয়! প্রদীপের গায়ে বাংলা হরফে লেখা 'বয়সের ভারে তিনটি ইচ্ছা পূরণের ক্ষমতা নেই। তবে একটি ইচ্ছা পূরণ করতে পারি।' মনে মনে ভাবি, ইস! তিনটি ইচ্ছে পূরণ হলে ভালো হতো। যাইহোক, একটা ইচ্ছে প...