ডেঙ্গুর ভয়ে...

ডেঙ্গুর ভয়ে রিংকু মিয়া, কাঁপে থর থর।
থার্মোমিটার দিয়ে বারবার, মাপে তার জ্বর।
তাপমাত্রা উঠলো কিনা গায়ে, একশত চার।
সে ভাবনায় মুখে সর্বদা, রাখে থার্মোমিটার।

মহা দুশ্চিন্তার অন্ত নেই, এই ডেঙ্গু নিয়া।
যায়না কোথাও ডেঙ্গুর ভয়ে, রিংকু মিয়া।
ডেঙ্গু তো নয় আজরাইল, ঐ আসছে উড়ে।
চিৎকার দিয়ে লাফিয়ে উঠে, ঘুমের ঘোরে।

প্রাণটা তার করে দুরুদুরু, ডেঙ্গু মশার ভয়ে।
উড়ে যাবে কখন বুঝি, মশার কামড় খেয়ে।
নাগাল না পায় মশা যাতে, করতে না পারে ঘায়েল
সেজন্যে সে মশারি খাটিয়ে, জ্বেলে রাখে কয়েল।

মশা নাকি বেশি কামড়ায়, মাছ মাংস খেলে।
শরীরের রক্ত মিষ্ট হয়, এগুলো পেটে গেলে।
তাই মাছ মাংস খায় না, সে নিরামিষ খায়।
শরীরের রক্ত তিক্ত করার, এটাই গুড় উপায়।

নামাজ কখনো পড়তো না, এখন নিয়মিত পড়ে
ডেঙ্গু থেকে বাঁচাও খোদা, এই মোনাজাত করে।
বাঘের ভয়ে, বাঘকে আমরা খাঁচাতে আটকায়।
মশার ভয়ে এখন আছি, নিজেই আটকে খাঁচায়।

আজব প্রাণী ভেঙ্গু মশা, রিংকু মিয়া ভাবে।
আজব প্রাণীর গজব কবে, দেশ ছেড়ে যাবে।
পুচকে একটা মশার কাছে কেন? করব নত শির।
বুক ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে বলে, আমি বাংলার বীর।

হঠাৎ সে চিৎকার দিয়ে, হারিয়ে ফেলে জ্ঞান।
ছুটে গিয়ে দেখে সবাই, সে মেঝেতে চিৎপটাং।
জ্ঞান ফিরলে সবাই আমরা, হাফ ছেড়ে বাঁচি
ফ্যাল-ফেলিয়ে তাকিয়ে বলে, আমি কি বেঁচে আছি?

তারপর বলে, ডেঙ্গু আমায় করেছিল আক্রমণ।
আমি বুঝি আর বাঁঁচবে না, মারা যাবো এখন।
আস্তে-আস্তে সত্যিই তার, গায়ে এলো জ্বর।
জ্বরে পুড়ে তার গাঁ অবিরাম, কাঁপছে থর থর।

ওরে তোরা কোথায় আছিস, আমায় চেপে ধর।
মশা বুঝি, উড়ে নিয়ে আমায় যাচ্ছে তেপান্তর।
ছুটে গিয়ে কেউ একজন, নিয়ে এলো ডাক্তার
'প্রলাপ বকবেন না' বলে দিল মুখে থার্মোমিটার।

জ্বর হয়েছে, থার্মোমিটার দেখে বলে ডাক্তার
একথা শোনামাত্রই ভয়ে, হয় অজ্ঞান আবার।
'চিন্তা করবেন না' বলে ডাক্তার, যখন জ্ঞান ফেরে
এই জ্বর এমনই এমনই যাবে, তিন পর সেরে।

জ্বর হয়েছে রিংকু মিয়ার, তবে ডেঙ্গু জ্বর নহে
জ্বর এসেছে কামড়ে নয়, ডেঙ্গু মশার ভয়ে।।

Comments

জনপ্রিয় ব্লগসমূহ

ইবলিশ শয়তান

প্রিপেইড মিটার বিড়ম্বনা

একটি চশমা ও কলমের গল্প

আলাদিনের দৈত্য

কাঙ্গালি ভোজ

মুরগী কবির

জন্মদিনের সারপ্রাইজ

এ তালা ভাঙবো কেমন করে

কাছে আসার গল্প

ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ