কাঙ্গালি ভোজ
রাতে হঠাৎ নুরা পাগলা আমার বাসায় এসে হাজির। ওকে দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
-তুই! এতো রাতে?
কাঁদোকাঁদো গলায় নুরা পাগলা বলল,
-মহা বিপদে পড়ছি, গুরু। আমারে উদ্ধার করেন।
-কি হয়েছে তোর?
-সে এক মহা সমস্যা...
-আরে, খুলে বল
-গুরু, পেটে সমস্যা
-কি, ডাইরিয়া হয়েছে?
-গুরু, সেটা হলে ত বাঁচতাম
-তাহলে, কি হয়েছে?
-গুরু, বদহজম হয়েছে। আপ-ডাউন কিচ্ছুই হচ্ছে না
-মানে?
-হাগু হচ্ছে না, আবার বমিও হচ্ছে না
-কি বলিস! তা খেয়েছিস কী?
-কাঙ্গালি ভোজ
মনে পড়ে গেলো, আজ ১৫ই আগষ্ট শোক দিবস। এইদিনে চারিদিকে শোকের বিরিয়ানির উৎসব চলে। নিশ্চয়ই নুরা পাগলা শোকের বিরিয়ানি খেয়েছে। সে সারাবছর পঁচা-বাসি আর পান্তা খায়। পেট ওটাতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছে। আজ বিরিয়ানী খেয়েছে, সেটা পেট কাউন্ট করতে পারছে না। আর সেজন্যই হয়তো পেট কোন আউটপুট দিচ্ছে না।
আমি নুরা পাগলাকে আশ্বস্ত করে বললাম,
-শোন, মানুষের যেখানে ডাল ভাত জোটে না। সেখানে তুই বিরিয়ানী খেয়েছিস! ভালো। সারাবছর পর একদিন ভালমন্দ খেলে যা হয়, তোর তাই হয়েছে। মানে, বদহজম।
-এজন্যি ত, আপনার কাছে আইছি। আপনে টেটমেন্ট দ্যান।
-আমি ট্রিটমেন্ট কিভাবে দিবো। আমি কি ডাক্তার?
-আপনি ডাক্তারের কম্পাউন্ডার। আপনিই পারবেন।
-তোরে কে বলছে? আমি কম্পাউন্ডার!
-আমি জানি...
-ওরে, ডাক্তারখানায় কম্পিউটারে রোগ নির্ণয় করি। কম্পাউন্ডার না।
-গুরু, অত কিচ্ছু বুঝি না। আপনি একটা কিছু করেন
আমি এখন কি করবো? পড়ে গেলাম বিপদে। পাগলা'টা যেভাবে ধরেছে। কিছু একটা করতে হবে। হাত দিয়ে নুরা পাগলার পেটে টিপ দিলাম। মনে হচ্ছে, শোকের বিরিয়ানি শোকে পাথর হয়ে পেটে আটকে আছে।
জামালকোঠা খাওয়ানোর চিন্তা করলাম। পরে ভাবলাম, খেয়ে যদি ডাইরেক্ট লাইন হয়ে যায়। তাহলে আরও বিপদ। তাই প্রাকৃতিক নিয়মে হওয়ার জন্য বললাম,
-বাথরুমে গিয়ে চেষ্টা কর
-গুরু, দু'ঘন্টা বসে থেকেও কাজ হয়নি
-বুঝছি, পানের বোটা লাগবো
-গুরু, লজ্জার কথা কি আর বলবো। সে চেষ্টাও করেছি। একটা বোটা ভিতরে ভেঙে আটকে আছে।
আহারে বেচারা। ভোগে সুখ নেই ত্যাগেই প্রকৃত সুখ।সেটা এখন বুঝতে পারছি। ঠিক সেইমুহূর্তে, একটা মেডিটেশন আইডিয়া মাথায় এলো। ওকে বললাম, 'এখানে চুপ করে বসে থাক'
আমি গুগলে সার্চ দিয়ে নূরা পাগলার অপছন্দের মানুষের ছবি বের করলাম।
প্রথম ছবিটা বিশিষ্ট মুরগীযোদ্ধা শাহরিয়ার কবিরের। যিনি পাকবাহিনীকে মুরগী সাপ্লাই দিতো। তার ছবি দেখার পর নূরা পাগলা কেমন যেন গাইগুই করতে লাগলো।
ট্রিটমেন্টে কাজ হচ্ছে দেখে দ্বিতীয় ছবিটা ওর সামনে ধরলাম। একজন নৃত্যশিল্পীর ছবি। যিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যার আনন্দে ট্যাংকের উপর নেচে ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্যমন্ত্রী আহসানুল হক ইনু। এই ছবিটা দেখে নূরা পাগলা গা গুলিয়ে ওয়াক ওয়াক শব্দ করতে লাগলো।
তৃতীয় ছবিটা বিশিষ্ট বীরকোদাল স্যার জাফর ইকবালের। যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় গর্ত খুঁড়ে গর্তের ভিতর লুুকিয়ে ছিলেন। সে এখন নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার গল্প শোনান।
স্যারের ছবিটা দেখার পর ডুগডুগি বাদক মতিয়া চৌধুরীর ছবি দেখাতে যাবো, যিনি বঙ্গবন্ধুর চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাতে চাইতেন। ঠিক সেইমূহুর্তে, নুরা পাগলা হড় হড় করে বমি করে দিলো...
-তুই! এতো রাতে?
কাঁদোকাঁদো গলায় নুরা পাগলা বলল,
-মহা বিপদে পড়ছি, গুরু। আমারে উদ্ধার করেন।
-কি হয়েছে তোর?
-সে এক মহা সমস্যা...
-আরে, খুলে বল
-গুরু, পেটে সমস্যা
-কি, ডাইরিয়া হয়েছে?
-গুরু, সেটা হলে ত বাঁচতাম
-তাহলে, কি হয়েছে?
-গুরু, বদহজম হয়েছে। আপ-ডাউন কিচ্ছুই হচ্ছে না
-মানে?
-হাগু হচ্ছে না, আবার বমিও হচ্ছে না
-কি বলিস! তা খেয়েছিস কী?
-কাঙ্গালি ভোজ
মনে পড়ে গেলো, আজ ১৫ই আগষ্ট শোক দিবস। এইদিনে চারিদিকে শোকের বিরিয়ানির উৎসব চলে। নিশ্চয়ই নুরা পাগলা শোকের বিরিয়ানি খেয়েছে। সে সারাবছর পঁচা-বাসি আর পান্তা খায়। পেট ওটাতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছে। আজ বিরিয়ানী খেয়েছে, সেটা পেট কাউন্ট করতে পারছে না। আর সেজন্যই হয়তো পেট কোন আউটপুট দিচ্ছে না।
আমি নুরা পাগলাকে আশ্বস্ত করে বললাম,
-শোন, মানুষের যেখানে ডাল ভাত জোটে না। সেখানে তুই বিরিয়ানী খেয়েছিস! ভালো। সারাবছর পর একদিন ভালমন্দ খেলে যা হয়, তোর তাই হয়েছে। মানে, বদহজম।
-এজন্যি ত, আপনার কাছে আইছি। আপনে টেটমেন্ট দ্যান।
-আমি ট্রিটমেন্ট কিভাবে দিবো। আমি কি ডাক্তার?
-আপনি ডাক্তারের কম্পাউন্ডার। আপনিই পারবেন।
-তোরে কে বলছে? আমি কম্পাউন্ডার!
-আমি জানি...
-ওরে, ডাক্তারখানায় কম্পিউটারে রোগ নির্ণয় করি। কম্পাউন্ডার না।
-গুরু, অত কিচ্ছু বুঝি না। আপনি একটা কিছু করেন
আমি এখন কি করবো? পড়ে গেলাম বিপদে। পাগলা'টা যেভাবে ধরেছে। কিছু একটা করতে হবে। হাত দিয়ে নুরা পাগলার পেটে টিপ দিলাম। মনে হচ্ছে, শোকের বিরিয়ানি শোকে পাথর হয়ে পেটে আটকে আছে।
জামালকোঠা খাওয়ানোর চিন্তা করলাম। পরে ভাবলাম, খেয়ে যদি ডাইরেক্ট লাইন হয়ে যায়। তাহলে আরও বিপদ। তাই প্রাকৃতিক নিয়মে হওয়ার জন্য বললাম,
-বাথরুমে গিয়ে চেষ্টা কর
-গুরু, দু'ঘন্টা বসে থেকেও কাজ হয়নি
-বুঝছি, পানের বোটা লাগবো
-গুরু, লজ্জার কথা কি আর বলবো। সে চেষ্টাও করেছি। একটা বোটা ভিতরে ভেঙে আটকে আছে।
আহারে বেচারা। ভোগে সুখ নেই ত্যাগেই প্রকৃত সুখ।সেটা এখন বুঝতে পারছি। ঠিক সেইমুহূর্তে, একটা মেডিটেশন আইডিয়া মাথায় এলো। ওকে বললাম, 'এখানে চুপ করে বসে থাক'
আমি গুগলে সার্চ দিয়ে নূরা পাগলার অপছন্দের মানুষের ছবি বের করলাম।
প্রথম ছবিটা বিশিষ্ট মুরগীযোদ্ধা শাহরিয়ার কবিরের। যিনি পাকবাহিনীকে মুরগী সাপ্লাই দিতো। তার ছবি দেখার পর নূরা পাগলা কেমন যেন গাইগুই করতে লাগলো।
ট্রিটমেন্টে কাজ হচ্ছে দেখে দ্বিতীয় ছবিটা ওর সামনে ধরলাম। একজন নৃত্যশিল্পীর ছবি। যিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যার আনন্দে ট্যাংকের উপর নেচে ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্যমন্ত্রী আহসানুল হক ইনু। এই ছবিটা দেখে নূরা পাগলা গা গুলিয়ে ওয়াক ওয়াক শব্দ করতে লাগলো।
তৃতীয় ছবিটা বিশিষ্ট বীরকোদাল স্যার জাফর ইকবালের। যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় গর্ত খুঁড়ে গর্তের ভিতর লুুকিয়ে ছিলেন। সে এখন নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার গল্প শোনান।
স্যারের ছবিটা দেখার পর ডুগডুগি বাদক মতিয়া চৌধুরীর ছবি দেখাতে যাবো, যিনি বঙ্গবন্ধুর চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাতে চাইতেন। ঠিক সেইমূহুর্তে, নুরা পাগলা হড় হড় করে বমি করে দিলো...
Comments
Post a Comment
আপনার মূল্যবান মতামত দিন