Posts

আমার ব্লগ

আহারে আমার স্বাধীনতা

আমি সস্তা জনপ্রিয়তা কিংবা লাইকের জন্য লেখালেখি করিনা। আবার চটিগল্প অথবা লুতুপুতু কিছু লিখি না। বিবেকের তাড়না থেকে লেখালেখি করি। যেটা জানানোর দরকার মনে করি, সেই বিষয়টা নিয়ে লেখার চেষ্টা করি।  আরামের সময়টুকু এর জন্য বিসর্জন দিতে হয়। প্রাপ্তি হিসেবে পাঠকদের প্রচুর ভালবাসা পাই। এই পাওয়াটাই আমার দ্বায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। এখন দু'তিন দিন না লিখলে অনেকেই ম্যাসেজ দেয়, খোঁজখবর নেয়, নতুন লেখার খবর জানতে চায়। আমার মত নগন্য লেখকের জন্য এটা অনেক বড় পাওয়া। আমি এই ভালবাসার সন্মানটুকু দিতে চাই। আমার প্রিয় পাঠকদের জন্য লিখতে চাই।  কিন্তু যতবার লিখতে বসি। কেউ যেন আমার ঘাড়ের উপর গরম নিঃশ্বাস ফেলে। বন্দুকের নল তাক করে রাখে। একবার লিখি, আরেকবার মুছে ফেলি। মোবাইলের ব্যাকস্পেস বাটন'টাকে এখন বড্ড নিরাপদ মনে হয়। আহারে আমার স্বাধীনতা! আহারে আমার বাংলাদেশ!!

ডিজিটাল বিড়ম্বনা

Image
ডিজিটাল বিড়ম্বনা ছোটবেলায় দেখেছি, আমাদের একটা গাভিন গরু ছিল। গরুর বাচ্চা প্রসবের সময় ঘনিয়ে এলে আব্বা টেনশনে রাতে ঘুমাতে পারতো না। কখন জানি, গরু বাচ্চা প্রসব করে ফেলে। তাই মাঝরাতে ঘুম ভেঙে বারেবার উঠে টার্চলাইট জ্বালিয়ে গোয়াল ঘর দেখতো।  এখন আমার অবস্থা ঠিক তেমনই, প্রতিমাসের শেষের দিকে টেনশনে থাকি। কখন জানি, বিদ্যুৎ শেষ হয়ে যায়। তাই বারবার বাসার সিঁড়ি ঘরের নিচে গিয়ে আলো জ্বালিয়ে বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার চেক করি।  আমার কাছে আগের সিস্টেমই ভালো ছিল। ভূতুড়ে বিল আসুক আর যে বিল'ই আসুক, মাস শেষে প্যারাটা একবার'ই পেতাম। এখন প্যারা সারা মাস জুড়ে। কারেন্ট আগে রিচার্জ করে, পরে খরচ করি। তারপরও যখন ফুড়ুৎ করে চলে যায়, বুকের ভিতর ঢক করে উঠে। এই বুঝি আমার ব্যালেন্স শেষ! তখন বাহিরে এসে খোঁজ খবর নিই। কারেন্ট শুধু আমারটা গেছে নাকি সবারটা গেছে। যদি দেখি, সবারটা গেছে তাহলে স্বস্তি পায়। আর যদি দেখি, সবারটা আছে তাহলেই বিপদ। আবার রিচার্জ করার জন্য দৌড়াতে হবে। এবার আমার প্রিপেইড গ্যাস মিটারের কথা বলি। আজব মিটার! গ্যাস জ্বালাইলে ঘোরে, না জ্বালাইলেও ঘোরে। তার সবচেয়ে বড় সমস্যা, টাকা রিচার্জ করলে গ্যাস সরা...

বাবা দ্যা রিয়েল হিরো

Image
 বাবা দ্যা রিয়েল হিরো বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করার মত আমার কোন যোগ্যতা বা কৃতিত্ব নাই। তবে একবার বাবার মুখের একটা কথা শুনে আমার জন্মটা সার্থক হয়েছে। এই কথাটি আজও আমাকে অনুপ্রাণিত করে। একদিন বাসে চড়ে বাবাকে নিয়ে ঢাকায় আসছিলাম। বাবার কানের সমস্যা ডাক্তার দেখাবো। বাসটি সাঁথিয়া উপজেলা অতিক্রম করার সময়, বাসের ভিতর কান্নার আওয়াজ শুনতে পায়। আমি আর বাবা বাসের পিছনের সিটে বসেছিলাম। বাসের সামনে ড্রাইভারের ঠিক পিছনের সিটে বসে এক মহিলা হাউমাউ করে কাঁদছে। কয়েকজন যাত্রী উঠে দাঁড়িয়ে তা দেখছে। কেউকেউ আবার সান্ত্বনা দিচ্ছে। আমি উঠে গিয়ে দেখি, মধ্যবয়সী মহিলা তার স্বামীকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। ভদ্রলোকটির অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন। ঢাকা ল্যাবএইডে ডাক্তার দেখানোর জন্য যাচ্ছিলেন। কিন্তু পথিমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আমি দ্রুত ড্রাইভারকে বাস থামাতে বললাম। ড্রাইভার বাস থামায়।  আমি উনাকে পাঁজর কোলে করে বাস থেকে নেমে সাঁথিয়া বাজারের দিকে ছুটলাম। একটা ওষুধ ফার্মাসিতে গিয়ে উনার পেসার মাপায়। উনার পেসার খুবই কম ছিল। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। আমি হাসপাতালের ঠিকানা চাইতেই বলল, এই সামনে কিছুটা পথ গেলে হাসপাতাল। আমি...

সেদিনও বৃষ্টি ছিল

Image
সেদিনও বৃষ্টি ছিল অফিসে যাওয়ার জন্য বের হয়েছি। হঠাৎ ঝুম বৃষ্টি পড়া শুরু করে। বাসায় ফিরে এসে ছাতা নিলাম, কিন্তু বৃষ্টির ফোঁটা এতো বড়বড় যে ছাতা মানবে না। তাই বাসার নিচে গ্যারেজে অপেক্ষা করছি, বৃষ্টি কমলে বের হবো। সে মুহুর্তে বাড়িওয়ালার ডাইভারের সাথে কথা বলছি। উনি কথার একফাঁকে বলেন, 'আপনার গ্রামের বাড়ি কি সিরাজগঞ্জে?' উত্তরে বললাম 'না, বৃহত্তর পাবনা জেলায়। তবে সিরাজগঞ্জ একসময় পাবনা জেলার মধ্যেই ছিল।' উনি রাজনৈতিক প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, 'মোহাম্মদ নাসিমের অবস্থা তো ভালো না। মনে হয়, বাঁচবো না।'  বললাম, 'আল্লাহপাক সকল কিছুর ফয়সালা দানকারী। খবরে শুনতেছি তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন।' উনি আশেপাশে তাকিয়ে বলেন, 'সুস্থ-মস্তিষ্কের কোন রাষ্ট্র ও নিয়ম-নীতিসম্পন্ন দেশ হলে এই নাসিম এবং তার পরিবারের ও কাছের লোকজনের মৃত্যুদণ্ড কেউ ঠেকাতে পারতো না।' একথা শুনে আমি অবাক দৃষ্টিতে তাকালাম। উনি আমার সেই দৃষ্টিতে ভ্রুক্ষেপ না করে আবারও বলেন, 'এই গলির মোড়ে নতুন দশতলা বিল্ডিং দেখছেন। ওটা সিরাজগঞ্জের বাবু ভাইয়ের বাড়ি। মোঃ নাসিম মন্ত্রী থাকাকালীন তাকে (রাজউক না রাজস্ব, সেটা আমি ...

একটি দূর্ঘটনা

Image
বিপদ আমার পিছু ছাড়ছেই না। একটা বিপদ কেটে উঠতে না উঠতেই আরেকটা বিপদ ঘাড়ের ওপর গরম নিঃশ্বাস ফেলছে। জানিনা আমার ভাগ্যে কি লেখা আছে? কেন এমন নিষ্ঠুর খেলা খেলছে বিধাতা? পাবনা থেকে লিচু ও আম কুরিয়ার করেছে। বিকেল ৫টায় এসএ পরিবহণ থেকে ফোন করে জানিয়ে দিলো, 'আপনার একটা পার্সেল এসেছে।' আমি বললাম, 'আপনাদের অফিস খোলা কয়টা পর্যন্ত?' বলল, 'রাত দশটা পর্যন্ত।' ঠিক আছে রাত সাড়ে ন'টার দিকে আসছি বলে ফোন রেখে দিলাম। রাত ন'টায় অফিস থেকে বের হয়ে একটা রিক্সা নিলাম। ইঞ্জিন চালিত অটো রিক্সা ঢাকার শহরে চলাচল নিষিদ্ধ কিন্তু এই লকডাউনে বাস চলাচল না থাকায় প্রচুর এই রিক্সার দৌরাত্ম্য বেড়েছে। ব্যাটারি চালিত এই রিক্সাগুলো ঢাকার প্রতিটি রাস্তায় এখন দাপিয়ে চলছে। পঙখিরাজের মত উড়ে অল্প সময়ে মধ্যে নিদিষ্ট  গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছে।  মিরপুর-১০ এ অবস্থিত এসএ পরিবহন থেকে আমার পার্সেলটি বাসায় পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত এ রিক্সাটি রিজার্ভ করি। রিক্সা চালকের বয়স বেশি না। সম্ভবতঃ বাসের হেল্পার অথবা লেগুনার ডাইভার হবে। লকডাউনে বাস-লেগুনা না চলায় অটোরিক্সা ধরেছে। ফাঁকা রাস্তায় রিক্সা সেইমতন গতিতে চালাচ্ছে। আমি...

সীমিত আকারে ঘুরাঘুরি

Image
ঈদের এই ক'দিন বাসায় শুয়ে-বসে খেয়ে ভুড়ি দুএক ইঞ্চি বেড়ে গেছে। বউরে কইলাম, 'বাহিরে হেঁটে ভুড়ি কিছুটা কমিয়ে আসি।' বউয়ের সাফ কথা, 'ভুড়ি বাড়ুক সমস্যা নাই, তবু বাহিরে যেতে পারবেনা।' অবশেষে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে গলির ভিতর'ই হাঁটার শর্তসাপেক্ষে বের হলাম। কিন্তু আমি বের হয়েই একদিকে হাঁটা দিলাম, যে রাস্তাটি সংসদ ভবনের দিকে গেছে। রাস্তায় হাঁটছি দেখে কম পক্ষে ছত্রিশ জন রিক্সা-সিএনজি ওয়ালারা বলছে, 'মামা যাবেন, মামা কই যাবেন?' কেউকেউ তো গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য জোড়াজুড়িও করেছে। কেউ বলেছে, 'মামা ভাড়া লাগবো না, এমনই চলেন।'  আহা এতো সমাদর, সত্যিই অবাক হওয়ার মতো! অথচ অফিসে যাওয়ার সময় এই রিক্সাগুলো কই থাকে জানিনা? তখন কত তেল জল এদেরকে ঢালতে হয়। তারপরও উত্তর দিবো, 'নাহ যামুনা৷' যদি বলি, 'চলেন না ভাই, ভাড়া বাড়িয়ে দিবো।' উত্তরে বলবে, 'এত কতা ক'ন ক্যা? বলছিনা, যামুনা।' যাইহোক, রিক্সা-সিএনজিওয়ালা যেন বুঝে আমি শরীর ঠিক রাখতে হাঁটছি। সেইভাবে জগিং করে হাঁটতে শুরু করলাম। হাঁটতে হাঁটতে চীন-মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে আসলাম। দুঃখিত, চীন-মৈ...

ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ

Image
আমার অসুস্থতার স্ট্যাটাস দেখে অনেকেই আমাকে ফোন দিয়েছে, খোঁজখবর নিয়েছে। কেউকেউ সাহায্যের হাত বাড়াতে চেয়েছে কিন্তু আমি বলেছি প্রয়োজন নাই। শুকুর গুজার আল্লাহপাকের আমাকে যথেষ্ট দিয়েছে। অনেকে আবার জানতে চেয়েছিল, আমার করোনা হয়েছে কিনা? আমি উত্তর দিতে পারিনি, যদিও আমি ভিষণ অসুস্থ ছিলাম। এটা করোনা কিনা সন্দিহান, আবার হলেও হতে পারে? আমাকে ডাক্তার কোভিড-১৯ এডভাইস করেছিল। আইইডিসিআরে গিয়ে টেস্টটি করতে বলেছিল। মনে ধুকধুকি দুর করার জন্য আমিও আগ্রহী ছিলাম। কিন্তু টেস্ট করতে পারিনি। বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করেছি, লাভ হয়নি। বাসায় এসে নমুনা সংগ্রহ বন্ধ হয়ে গেছে, আইইডিসিআরেও নমুনা সংগ্রহ বন্ধ, শিশু হাসপাতাল নমুনা সংগ্রহ করেনা, এসএসএইচ শুধুমাত্র সরকারি ডাক্তার-নার্সদের জন্য। পিজি আর ঢাকা মেডিকেলে হচ্ছে, সেখানে টেস্ট করতে হলে সেহেরি খেয়ে লাইন ধরতে হবে তবেই সম্ভব। প্রাইভেট হাসপাতালে এখনো অনুমোদন দেয়নি তাই আর করা হয়নি। কর্মক্ষেত্রে খুব কাছের একজন মানুষের করোনায় মৃত্যুতে আমি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। বোধকরি, এটাই আমার অসুস্থতার অন্যতম কারণ। আমার জ্বর-সর্দি ছিলনা, শুধু খুসখুসে কাশি ছিল, বুকে চাপচাপ অনুভূতি হচ্...