বেলতলায় একবারই যাওয়া ভালো
-দোস্ত, তুই কোথায়?
বর্তমানে আমি যে জায়গায় অবস্থান করছি। সেই জায়গার নাম'ই বললাম।
-৭ মার্চে আছি...
বান্ধবী আমার অবাক হয়ে বলল,
বান্ধবী আমার অবাক হয়ে বলল,
-আরে যাহ! ৭ই মার্চের ভাষণ সেই কবেকার কথা...
আমি বললাম,
আমি বললাম,
-আরে শোন, ৭মার্চের ভাষণে না ভবনের কাছাকাছি আছি
-কীহ, যা-তা বলিস!
-অবাক হলি?
-হবোনা, কি বলছিস এসব! ভাষণ না ভবন।
-শোন, ৭ মার্চ এখন ভাষণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ভবনের মধ্যেও ঢুকে গেছে। মেয়েদের হোস্টেলের নামকরণ হয়েছে।
-বুচ্ছি, তুইই ওখানে কি করি? টাংকি মারছিস?
-শোন, আমাদের রাস্ট্রপ্রতি যদি মারতে পারে টাংকি। আমি মারলে দোষ কি?
বান্ধবী আমার ৯ নম্বর বিপদসংকেত শুনিয়ে বলল,
-দেখিস, ভাবী জানলে কিন্তু খবর আছে...
-সেই খবর! আমি আগেই মুখস্থ করে রেখেছি
-ধুর, তোর সাথে কথায় পারবনা
-থাক, আমার কথা। এখন বল তো কি খবর? কি মনে করে ফোন করেছিস?
-থাক, আমার কথা। এখন বল তো কি খবর? কি মনে করে ফোন করেছিস?
এবার বান্ধবী একেবারে চুপসে গেলো। সে নাক সিটকে কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলল,
-তোর কি হাতে সময় আছে?
-জ্যামে যেহেতু আটকে বসে আছি। সময় অফুরন্ত...
বান্ধবী দুখানা বড়বড় ঢোক গিয়ে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে বলল,
-তোর কোন সাইকিয়াট্রিস্টের সাথে পরিচয় আছে?
-কেন?
-খুব বিপদে পড়েছি রে। ওর সাথে বনিবনা হচ্ছে না।
-কে? তোর হাজবেন্ড?
-হ'রে, খুব একজস্টেড ফিল করছি। প্লিজ, হেল্প করনা দোস।
-সমস্যাটা কি?
-জানিস তো, আমাদের এরেঞ্জড ম্যারেজ। বিয়ের পর বছরখানিক ভাল ছিল। এরপর থেকে আমার সাথে ও খুবই বাজে ব্যবহার শুরু করে। সারাক্ষন খিটখিটে মেজাজে থাকে। কথা বললেই খ্যাচ খ্যাচ করে ওঠে।
আমি বিজ্ঞ ডাক্তারের মত জিজ্ঞেস করলাম,
-উনি, লাস্ট কবে কৃমির ওষুধ খাইছে?
-আবারও ফাজলামো করছিস?
-আরে না, একমাত্র গুড়াকৃমির প্রবলেম ছাড়া কোন মানুষ সারাক্ষন খিটখিটে মেজাজের হয়না! উনাকে কৃমির ওষুধ খাওয়া। সব ঠিক হয়ে যাবে।
-একটু সিরিয়াসলি নে...প্লিজ
-আমি সিরিয়াসলি বলছি
প্রায়শই পরিচিত মানুষ তাদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আমার সাথে কাউন্সেলিং করে। তাদের বেশির ভাগই অসুখ-বিসুখ নিয়ে। মেডিকেল সেক্টরে স্বনামধন্য একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করার সুবাদে এই ফোনগুলো আসে। আমিও চেষ্টা করি সবাইকে সঠিক গাইড দেওয়ার।
তবে বান্ধবীর সমস্যা একেবারেই ভিন্ন। আমি ওর সাথে কথা বলে যা বুঝলাম। ও প্রথমে ট্রিটমেন্টে যাবে তারপর ভালো না হলে ফাইনাল সিদ্ধান্ত নিবে। আমি সান্ত্বনা দিয়ে ওর হাজবেন্ডের আচরণের কোন অসুখ আছে কিনা সেটা জানার জন্য বললাম,
-তোর হাজবেন্ডের কোন ক্রনিক ডিজিজ বা হাই প্রেসার আছে?
-নাহ
-উনি কি এলকহলিক। মানে, ড্রাগ এডিক্ট?
-সেরকম কিছু চোখে পড়েনি
-কোন ঘ্যানঘ্যানানি শারীরীক সমস্যা?
-স্বাস্থ্য বেশ ভাল
-অফিসে কোন সমস্যা? যেটা হয়ত তোর সাথে শেয়ার করে না
-তাই বলে কি সারাক্ষন খিটমিট করবে?
-তুই কি তাকে অযথা ন্যাগিং, ইরিটেট করিস?
-বিশ্বাস কর, আমি তাকে বাড়তি একটা কথাও বলি না
-পরকিয়ায় আসক্ত?
-জানি না, তবে হাভ ভাবে মনে হয় না
-তাহলে তো সব ঠিকই আছে
-ঠিক, দেখলি কোথায়?
-এতগুলো প্রশ্নের কোন নেগেটিভ উত্তর নেই। তার মানে কি দাঁড়ায়?
-তাহলে, ও এমন করে কেন?
-হয়ত, উনার খাইসলতই খারাপ।
-বলিস কী?
-শোন, এটা কোনে দোষের না। সে বেসিক্যালি একটা ডিফিকাল্ট ক্যারেক্টার টু লিভ উইথ!
-এখন আমি কি করব?
-তুই একটা কাজ কর। পরিবারের বড় কারো সাথে ডিসকাস কর। যে তাকে ব্যাক্তিগত ভাবে চেনে। তবে সবচেয়ে ভালো হয়, তোর হাজবেন্ডকে কাউন্সেলিং করা। এতে ইম্প্রুভমেন্ট হলেও হতে পারে।
থ্যাংকস দোস্ত, তোর কতগুলো ভাল্লাগছে। বলে বান্ধবী ফোন রেখে দিল।
পরক্ষনে চিন্তা করলাম। এরকম অনেক মানুষ আছে যাদের খাইসলত আজীবন খারাপ থাকে। তাদের সাথে মানিয়ে চললে এসব একসময় ইউজড টু হয়ে যায়। অনেক সুন্দরী নারী আছে, যারা টাঁকওয়ালা কিংবা ভুড়িওয়ালার সাথে দিব্যি সংসার করছে।
আমি বিশ্বাস করি, হাগ দাইসেলফ থিওরি। মানে, অন্য কারো ভালবাসার আশায় না থেকে নিজেই নিজেকে ভালবাসা। নিজের মত করে আনন্দ খুজে নেয়া। অন্য কোন কিছুতে নিজেকে ব্যস্ত রাখা। একজনকে ছেড়ে আরেকজনকে ধরা মোটেই উচিত নয়।
কারন, দ্বিতীয়বার যাকে গ্রহণ করবেন। আই মিন সেকেন্ড ম্যারেজ, দেখা গেলো তার শুধু স্বভাব'ই না চরিত্রও খারাপ! তখন কি অবস্থা হবে? তাই ন্যাড়ার বেলতলায় একবারই যাওয়া উচিত। দ্বিতীয়বার নয়!!
Comments
Post a Comment
আপনার মূল্যবান মতামত দিন